Saturday, June 29, 2013

অনুগল্পঃ সাদামাঠা জীবন


আনমনে লিখে যাচ্ছি। হঠাৎ পেছনে শব্দে একটু চমকে উঠলাম, স্বাতীর ভয়ে! আচ্ছা, রাত কত হল? সময় দেখার আগেই ল্যাপটপের ডালাটা নামিয়ে দিতে হল। আলোটাও নিভিয়ে দিলাম দ্রুত। ভারি অন্ধকার নেমে এলো মুহূর্তেই। চুপচাপ আছি, পাশের ঘর থেকে স্বাতীর নড়াচড়ার শব্দ আসছে। ঠিক মাথার পেছনে দাঁড়িয়ে, সদ্য ভাঙ্গা ঘুম জড়ানো কণ্ঠে একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলল,
-রাত কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে?
-ইয়ে মানে...
-ইয়ে মানে...ঘোড়ার ডিম! সাড়ে তিনটা বাজতে যাচ্ছে! 

‘ঘোড়ার ডিম’ এই কথাটা যে স্বাতী সারা দিনে কতবার বলে আল্লাহ্‌ জানে। অনেক চেষ্টা করেও কথাটা বাদ দিতে পারে নি। আমার শুকনো হাসি মুখ দেখে ওর রাগ আরও বেড়ে গেল!
-হাসবা না! এতো রাত জেগে কি সব ছাই লিখছ?
-কই না! লিখি না তো! এমনি চুপচাপ বসে ছিলাম।
-হুম! সেটা তো এইস ট্রে আর কফির মগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে!
-ও! (আরও রাগিয়ে দেওয়ার জন্য) জান, আরেক মগ কফি দিতে পারবা? প্লিজ!
-জান? প্লিজ না? মগ দিয়ে তোমার মাথায় বাড়ি দেবো! এতো বড় ফ্ল্যাটে আমি একটা মানুষ একা একা এক ঘরে পড়ে ঘুমাচ্ছি, তোমার সে খেয়াল আছে? তুমি আছো তোমার ঘোড়ার ডিম নিয়ে।
-তুমি যাও...শুয়ে পড়... আমি আসছি!
-আছি না ছাই! আমি ওয়াশ রুমে যাচ্ছি... বের হয়ে যেন তোমাকে রুমে দেখি! তাড়াতাড়ি সব বন্ধ করো।


রেগে গেলে না স্বাতীকে দারুন লাগে। হয়তো সব মেয়েকে লাগে। তাই মাঝে মাঝে ইচ্ছা করেই ওকে রাগিয়ে দিই। এই ছোট ছোট রাগ-বিরক্তির মধ্যে যে একরাশ ভালবাসা লুকিয়ে থাকে...সেই ভালবাসা টুকু আমি খুব উপভোগ করি! তবুও তো আমাকে রাগ দেখানোর, ঠোঁট ফুলিয়ে অভিমানে দু’ফোঁটা চোখের পানি ফেলার, গাল দুটো লাল করে ভালোবাসা প্রকাশ করার কেউ আছে...সাদামাঠা জীবনে এটাই বা কম কি?

শূন্য পথিকের মূল পোস্ট>>

No comments:

ফেসবুক প্লাগইন: শূন্য পথিক by শূন্য পথিক (ফেসবুকে আমি) →ফেসবুকে অ্যাডমিন- হুমায়ূন আহমেদ ফ্যান পেজ

Post a Comment