Sunday, March 16, 2014

অনুগল্পঃ বিলাসিতা


-বাজান, কয়েল আনছো?
-ভুইল্লা গেছি রে, বাজান!
-আইজও ভুইল্লা গেছো? কয়েলের কতা তুমার এক দিনও মনে থাহে না ক্যান? জানো বাজান, মশার কামুড়ে আমার রাইতে ঘুম অয় না!

অনুগল্পঃ ছোট্ট পাখি


ছোট্ট একটা পাখি উড়ে চলেছে। সঙ্গিনীকে নিয়ে তার ছোট্ট নীড় ছিল উঠোনের পেয়ারা গাছের ডালে। পেয়ারা পাতার আড়ালে ঝড়-বৃষ্টি-রোদ আর বাড়ির দুষ্টু ছেলেটার চোখ ফাঁকি দিয়ে সংসার পেতেছিল তারা দু’জন। সুখের সংসার ছিল বলতে হয়। সকাল সকাল দু’জন মিলে কিচির-মিচির প্রেম করতো! একটু বেলা হলেই খাবারের সন্ধানে দুজন দুই দিকে উড়ে যেত। খাবারের সন্ধানে এই গাছ ছেড়ে সেই গাছ, এই আঙ্গিনা থেকে সেই আঙ্গিনা চরে বেড়াত কিন্তু মন পড়ে থাকত সেই পেয়ারা গাছে। শেষ বিকেলে আবার সেই কিচির-মিচির প্রেম। বাড়ির মমতাময়ী গৃহিণীর মমতায় তাদের দিন ভালোই কাটছিল। সেই দুষ্টু ছেলেটার চোখ থেকে গৃহিণী তাদের ভালোবাসার নীড়কে আড়াল করে রেখেছিলেন। 

কিন্তু হঠাৎ একদিন ঝড়ের মত কোথা থেকে কী হয়ে গেল। সেই দিন সঙ্গিনীর জন্য খাবার নিয়ে ফিরে দেখল পেয়ারা গাছটি উঠোনে পড়ে আছে। কাঁটা গাছটি দেখে তার বুকটা হাহাকার করে উঠল! সে উঠোনে পড়ে থাকা গাছে তাদের তছনছ হয়ে যাওয়া নীড় খুঁজে পেল ঠিকই, কিন্তু পেলনা প্রিয় সঙ্গিনীকে। পাখিটা পাগলের মত খুঁজে ফিরল তাকে। আঙ্গিনায়, গাছে, আনাচে-কানাচে কোথাও দেখা মিলল না তার সঙ্গিনীর। একরাশ অভিমানে সঙ্গী হারা ছোট্ট পাখিটি উড়ে চলল এক অজানায়। এমন এক অজানা যেখানে ঠিকানাহীন পাখিটিকে খুঁজে পাবে না ঐ দুষ্টু মানুষ গুলো!

শূন্য পথিকের মূল পোষ্ট>>

Tuesday, January 21, 2014

একটি সুন্দর দৃশ্য!


সরকারী তিতুমীর কলেজের সামনে বাস নষ্ট হয়ে গেল। মেজাজ খারাপ নিয়ে বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে গুলশান-১ নম্বরের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। গুলশান সার্কেলের কাছাকাছি দেখি একটা কিউট পিচ্চি (মেয়ে) একটা প্রাইভেট কারের দরোজার সামনে জিব বের করে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! পিঠে একটা ছোট্ট পিঙ্ক কালারের কার্টুন ব্যাগ। পিচ্চিটার এমন জিব বের করে মাথায় হাত দেওয়া ভঙ্গি দেখে কেন জানি হেসে দিলাম! কী এমন সর্বনাশ হয়েছে যে

অনুগল্পঃ টিকিট


ঈদে বাড়ি ফেরার ট্রেনের টিকিটের জন্য ঐন্দ্রিলা সকালে একটি বেসরকারি ফোন কোম্পানির ই-টিকিটিং বুথে আজ লাইনে দাঁড়িয়েছিল। আজ থেকে রেলের অগ্রিম ঈদ টিকিটের শিডিউল শুরু হচ্ছে। অক্টোবরের ১০ তারিখে ভার্সিটির শেষ পরীক্ষা, ১১ তারিখ থেকে ঈদের শিডিউল শুরু হবে। আজ সেই ১১ তারিখের অগ্রিম টিকিট দিচ্ছে। সকাল ৯টার মধ্যে সে মোবাইল টিকিটের জন্য এসে দেখে বাইরে মানুষের বিশাল এক সারি! প্রথম দিনে এতটা ভিড় হবে ভাবতে পারে নি। প্রায় ঘন্টা তিনেক অপেক্ষা করার পর তার পালা আসলো। নিয়ম মত বুথ থেকে একটা

অনুগল্পঃ এপিঠ-ওপিঠ


জমি সংক্রান্ত ঝামেলার জের ধরে তিক্ততার শুরু। চার ভাই এক দিকে আর বৃদ্ধ বাবা একা এক দিকে। ছেলেদের জমে থাকা রাগের প্রকাশ ঘটলো এক রোজার দিন দুপুরে। কথা কাঁটাকাটির এক পর্যায়ে বড় ছেলে জহির ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাবাকে ধাক্কা দিল। বৃদ্ধ বাবা যুবক ছেলের ধাক্কা সামাল দিতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেলেন। মাথাটা গিয়ে লাগলো একটা খুঁটির সাথে। জহিরের রাগ তাতেও কমে না, পারলে বাবাকে আরও কয়েকটা লাগিয়ে দেয়! কিন্তু বাইরের দুই

অনুগল্পঃ পশু-২


ট্রেন থেকে নামতেই ৮-১০ জনের কুলির একটা দল নিজাম সাহেবকে ঘিরে ধরলো। তার সাথে শুধু একটা ব্যাগ আর একটা খেলনার প্যাকেট, তবুও একটা কুলি নিয়ে আরাম করে যাওয়া যায়। কুলি নিলে নিজের স্ট্যাটাসটা মানুষকে বোঝানো যায়। আবার এই সব ছোটলোকের বাচ্চাদের দুই পয়সা ইনকামও হয়! কুলিদের জটলাতে একটা পিচ্চিকে দেখা যাচ্ছে। বড় হারামজাদাদের তেল বেশি থাকে, এই সব পিচ্চিরা অল্প টাকা টাকা পেলেই খুশি।

অনুগল্পঃ অভিমানী


বাবা-মা আর তারা দুই ভাই-বোন এই চারজন নিয়ে রিদিমাদের ছোট পরিবার। বাবা ছোট ব্যাবসা করেন, মা শিক্ষিকা এবং ভাই এবার এইচএসসি দিলো। মফস্বলের এমন একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিমানী মেয়ে রিদিমার হারিয়ে যাওয়া নিয়ে আজকের গল্প। রিদিমা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে, তার বয়স ১৫ কিন্তু রেজিস্ট্রেশনে একবছর কমিয়ে ১৪ করা হয়েছে। অর্থাৎ সে যে বয়সটা পার করছে রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের মতো পৃথিবীতে এমন ‘বালাই’ আর নাই! তার সমবয়সী অন্যদের ব্যাপার যেমনটা হোক না কেন, সে যে সবার কাছে ধীরে ধীরে ‘বালাই’ হয়ে উঠছে এটা সে ঠিক বুঝতে পারছে। হঠাৎ করে এই

অনুগল্পঃ মুদি দোকান!


অনেক দিন কাগজ কলম নিয়ে বসা হয়না। মাথায় বেশ কিছু গল্পরা উঁকি ঝুঁকি মারছে কিন্তু কাগজ কলম নিয়ে বসলে আর আসে না। সে দিন বহু কষ্টে একটা গল্প লেখার পরে ফরিদ অবনীকে মেইল করল। 

অবনী গল্পটা পড়ে রিপ্লাই দিলো ‘দোস্ত, সাউথ আফ্রিকা চলে আয়, এখানে মুদি দোকানের বড়ই অভাব!’ 

Sunday, January 5, 2014

অনুগল্পঃ তিথি


লিয়ানার কিছু দরকারি বই নীলক্ষেত থেকে কিনে নিউমার্কেটের ফুটওভার ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আছি। সে গেছে ছেলেকে নিয়ে মার্কেটের ভেতরে, ছেলের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে। হরেক রকম মানুষ হরদম চলাচল করে এই ফুটওভার ব্রিজের উপর দিয়ে। সব সময় ভিড়। তার ওপর ভ্যাপসা গরমে সেদ্ধ হওয়ার দশা। মোবাইলটা বের করে লিয়ানাকে একটু তাড়া দিলাম। শপিং এর ব্যাপারে মেয়েদের তাড়া দিয়ে লাভ নাই। ফোনটা কেটে দিয়ে পেছন দিকে একটা কণ্ঠে চমকে গেলাম!

অনুগল্পঃ অপ্সরীর গল্প


ছুটির দিনে সকাল সকাল টিউশনিতে যাচ্ছি। এই দিনেও লোকাল বাসের চাপাচাপির ঠ্যালাতে চ্যাপ্টা হওয়ার দশা। প্যান্ট পকেটে মোবাইলটা বেজে উঠল। দুই হাত উপরে তুলে কোনো মতে দাড়িয়ে আছি। হাত নামিয়ে যে মোবাইলটা বের করবো তার উপায় নেই। বাজুক... বাস থেকে নেমে ফোন দেওয়া যাবে। আবার বেজে উঠল... আবার...আবার... তার মানে নিরু ফোন করেছে। খুব বিপদ! কল না ধরা পর্যন্ত ফোন দিতেই থাকবে। কেটে দিলেও শান্তি নেই। আবার কল দিবে।

আমার শিক্ষক


বাংলা ক্লাস। শিক্ষক একটু দেরি করেই ঢুকলেন। কী পড়াবেন আমরা কেউই জানি না। তো রুমে ঢুকেই তিনি প্রশ্ন করলেন,
-তোমাদের মধ্যে কে কে প্রেম করো?
(সারা ক্লাস নীরব, একজন আরেক জনের মুখের দিকে তাকাচ্ছে)

কপি-পেস্ট!


মনে করুন, আপনি আপনার নিজের একটা ইউনিক লাইন ফেসবুকে পোষ্ট করলেন। যেহেতু আপনি এবং আপনার জেনারেশন হুমায়ূন আহমেদের পাড় ভক্ত, লাইনটাতে হুমায়ূনীয় গন্ধ আসাটা স্বাভাবিক। হুমায়ূনীয় গন্ধ আসাটা অন্তত পাপের কিছু না, তাই না?
কেউ একজন লাইনটা কপি করে হুমায়ূন স্যারের নামে পোষ্ট করে দিল। সেখান থেকে আরও ১০জন বন্ধু এবং ১টা অ্যাডমিন তার পেজে হুমায়ূন আহমেদ নামে পোষ্ট দিয়ে দিল।

শত্রু শত্রু খেলা!


আজ ইফতারীর ৩০-৪০ মিনিট আগে আমাদের দরজাতে একজন মা এসেছেন, তাঁর সাদা ড্রেস পরা মেয়েকে খুঁজতে! লাল ড্রেস পরা একটা ছেলে তাঁর মেয়েকে এই বাসার কোনো এক ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেছে! তাঁর ছোট ছেলে বোনকে একজনের সাথে এই বাসাতে ঢুকতে দেখেছে। তিনি রিপোর্ট পেয়ে ছুটে এসেছেন। ভদ্র মহিলা মেয়ের খোঁজে এই প্রত্যেকটা ফ্ল্যাটে নক করে চলেছেন। এই বাসাতে চার তলাতে একটা ফ্ল্যাট, পাঁচ তলাতে আমরা একটা ফ্ল্যাট, পাশে আরেকটা ফ্ল্যাট, ছয় তলাতে তিনটা ফ্ল্যাট নিয়ে মোট ছয়টা ফ্ল্যাট ব্যাচেলর থাকে। ছয় তলাতে একটা ফ্ল্যাটে গিয়ে

বিশ্বাস


আমি ক্লাস এইটে থাকতে আমার বাবাকে এলাকার সেচ্ছাসেবক (!) টাইপ একজন এসে বলেছিল, আমি নাকি নিয়মিত সিগারেট খাই! তার কথা শুনে আমার বাবা শুধু বলেছিল, 'আমি নিজে যে জিনিস খাই না, আমার ছেলেও সেই জিনিস খাবে না! এটা মিথ্যা কথা।'
এই কথাটা কোনো ভাবে আমার কানে চলে আসে। কথাটা শোনার পর আমি খুব খুশি